আজকে পরিচয় করে দিচ্ছি এমন একজন গুণী ভারতীয় অভিনেত্রী সাথে যিনি (মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা) পেয়েছেন। তিনি হলেন ওয়াহিদা রেহমান একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী যিনি বিংশ শতকের ষাট, সত্তর ও আশির দশকে হিন্দি সিনেমার সফল অভিনেত্রী হিসাবে খ্যাতিলাভ করেছিলেন। তিনি সত্যজিৎ রায়ের অভিযান ছবিতেও অভিনয় করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তিনি দূর থেকে বিশেষ ভূমিকা রেখে স্মরণীয় হয়ে আছেন। ভারতীয় চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদানের জন্য তাকে ২০২৩ সালে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়।জন্ম
ওয়াহিদা রেহমান ১৯৩৬ সালের ১৪ মে ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে জন্মগ্রহণ করেন। ওয়াহিদা রেহমান ১৯৫৬ সালে ‘সিআইডি’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্যরর দিয়ে হিন্দি সিনেমার জগতে প্রবেশ করেন। এ ছবির সাফল্যের পর ১৯৫৭ সালে‘পয়সা’ ছবিতে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করেন। এরপর ষাট, সত্তর ও আশির দশকে তিনি ছিলেন হিন্দি সিনেমার খ্যাতিমান অভিনেত্রী। তিনি সত্যজিৎ রায়ের অভিযান ছবিতেও অভিনয় করেন।
জন্ম
ওয়াহিদা রেহমান ১৯৩৬ সালের ১৪ মে ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে জন্মগ্রহণ করেন। ওয়াহিদা রেহমান ১৯৫৬ সালে ‘সিআইডি’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে হিন্দি সিনেমার জগতে প্রবেশ করেন। এ ছবির সাফল্যের পর ১৯৫৭ সালে‘পয়সা’ ছবিতে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করেন। এরপর ষাট, সত্তর ও আশির দশকে তিনি ছিলেন হিন্দি সিনেমার খ্যাতিমান অভিনেত্রী। তিনি সত্যজিৎ রায়ের অভিযান ছবিতেও অভিনয় করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অবদান
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাত্রিতে বাংলাদেশে গণহত্যা শুরু হলে মুম্বইয়ের অধিকাংশ সংবাদপত্রে এর সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়। মুম্বাইয়ের পেশাজীবী সচেতন মানুষ বাংলাদেশে গণহত্যার প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ হন। বাংলাদেশকে সহায়তা করার লক্ষ্যে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে তারা মুম্বাইয়ের সাংবাদিক সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসায় সমবেত হন। সভায় আলোচনাক্রমে মহারাষ্ট্রে ‘বাংলাদেশ এইড কমিটি’ গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কমিটির সভাপতি, সহ-সভাপতি ও অনারেরি সেক্রেটারি মনোনীত হন যথাক্রমে মুম্বাইয়ের ব্যবসায়ী হরিশ মহেন্দ্র, সাংবাদিক সলিল ঘোষ এবং ওয়াহিদা রেহমান। কমিটি মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন দানের লক্ষ্যে নানাবিধ ভূমিকা গ্রহণ করে এবং সেখানে ওয়াহিদা রেহমানের ছিল অতুলনীয় অবদান। ওয়াহিদা রেহমানকে বাংলাদেশের প্রবাসী সরকার একটি চিঠি পাঠায়। চিঠির বার্তাবাহক নূরুল কাদিরের মুখে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অত্যাচার ও গণহত্যার বিবরণ শুনে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। বার্তাবাহককে মহারাষ্ট্রের তৎকালীন গভর্নর এবং বাংলাদেশ এইড কমিটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক নবাব আলী ইয়ার জংয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করেন। তিনি স্বল্পতম সময়ে মুম্বাই চেম্বার অব কমার্স অ্যাণ্ড ইণ্ডাাস্ট্রিজের সভাপতি, মুম্বাই হাইকোর্টের ব্যারিস্টার, প্রখ্যাত ইংরেজি সাপ্তাহিক ব্লিৎজ সহ মুম্বইয়ের বিভিন্ন সংবাদপত্রের সম্পাদকের কাছে ফোন করে, কখনও সরাসরি গিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গঠনে তৎপরতা চালান। বুদ্ধিজীবী, শিল্পপতি, সম্পাদক এবং মহারাষ্ট্র প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি, যাদের ওপর ওয়াহিদা রহমানের ছিল প্রচ্ছন্ন প্রভাব, তাদের কাছেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সমর্থন আদায়ের জন্য যান। তিনি অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতায় বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের পক্ষে জনমত গঠন ছাড়াও মুম্বাইয়ের চলচ্চিত্রাঙ্গনের সবাইকে মুক্তিযুদ্ধে সহায়তায় এগিয়ে আসতে অনুপ্রাণিত করেন। তার এই অবদানের জন্য ২০১৩ সালে তাকে ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’ প্রদান করা হয়।
পুরস্কার
ওয়াহিদা রেহমান ১৯৭১ সালে সেরা অভিনেত্রী হিসেবে ভারতের জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন। অন্যান্য পুরস্কারের মধ্যে ১৯৬৬ ও ১৯৬৮ সালে ফিল্ম ফেয়ার, ১৯৯৪ সালে ফিল্ম ফেয়ার আজীবন সম্মননা পুরস্কার, ১৯৭২ সালে পদ্মশ্রী পুরস্কার এবং ২০১১ সালে পদ্মভূষণ পুরস্কার লাভ করেন। ভারতীয় চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদানের জন্য তাকে ২০২৩ সালে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়।
(জয়পুরহাট জেলার কৃতি ও গুণী সন্তান ফেসবুক পেইজ)