1. admin@culturenews24.com : admin :
বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০৭:৫৯ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি
আমরা সারা বাংলাদেশ ব্যাপী জেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দিচ্ছি। আগ্রহী প্রার্থীগণ ই—মেইল এ সিভি ও ছবি পাঠিয়ে আবেদন করতে পারবেন।E-mail: newsroom@culturenews24.com, culturenews24.com@gmail.com, Mob: 01726-860079, 01856-101610. আমরা শুধুমাত্র সংস্কৃতি বিষয়ক সংবাদ প্রচার করে থাকি। (শর্ত প্রযোজ্য) বি:দ্র: সাইট উন্নয়নের কাজ চলছে...............।
সর্বশেষ
ফরিদপুরে নকল শিশু খাদ্য ও ঔষধ কারখানায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান ফরিদপুরে ছাত্রলীগের উদ্দ্যোগে বিনামূল্যে গামছা, পানি ও শরবত বিতরন ফরিদপুরে ভুয়া পশু চিকিৎসকের সাজা প্রদান ফরিদপুরে ওয়েস্টার্ন পার্কে দুইদিন ব্যাপী ফ্রি মেহেদী উৎসব দারিদ্র বিমোচন যাকাতের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত ফরিদপুরে ইমামদের মধ্যে ঈদ উপহার বিতরণ ফরিদপুরে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেট ও কোয়ালিফাই রাউন্ড ক্রিকেট লীগ সালথায় কৃষককে কুপিয়ে হত্যায় পাঁচ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ফরিদপুর কোতয়ালী থানা পুলিশ কর্তৃক পরিবহন সুপারভাইজারের লাশ উদ্ধার ফরিদপুরে ৪২ তম জাতীয় ক্রিকেট প্রতিযোগিতা শুরু

কথা ছিল ঢাকার ছবিতে অভিনয়ের

  • সময় : শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১৬৪ বার দেখা হয়েছে।

কথা ছিল ঢাকার ছবিতে অভিনয়ের

শুরু করেছিলেন দূরদর্শনের সংবাদপাঠিকা হয়ে। তারপর অভিনয়ে। মাত্র এক দশকের ক্যারিয়ার। স্বীকৃতিস্বরূপ এসেছিল পদ্মশ্রী, দুটি জাতীয় পুরস্কার এবং ফিল্মফেয়ার। অভিনয় ও ব্যক্তিত্বে ছিল আলাদা ঘরানা। তাঁকে বলা হতো বহুমাত্রিক নারী। তিনি স্মিতা পাতিল। জন্ম পুণেতে। ১৯৫৫ সালের ১৭ অক্টোবর। বাবা শিবাজিরাও গিরধর পাতিল রাজনীতিক। মা বিদ্যাতাই পাতিল ছিলেন সমাজসেবী। দুজনের ব্যক্তিত্বের প্রভাব পড়েছিল স্মিতার বেড়ে ওঠায় ও মানসিকতায়। এ বহুমাত্রিক নারীর নানা গল্প তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

ঢাকার ছবিতে অভিনয়ের কথা ছিল

১৯৮৬ সালের ডিসেম্বর মাস। স্মিতার মৃত্যুর কিছুদিন আগে ঢাকার জনপ্রিয় সিনেমা পত্রিকা ‘সাপ্তাহিক সিনেমা’য় বিশাল করে এ শিরোনাম দিয়ে লেখা হয়েছিল-ঢাকার ছবিতে অভিনয় করবেন স্মিতা পাতিল। এটি ছিল ‘সাপ্তাহিক সিনেমা’র প্রচ্ছদ প্রতিবেদন। মৃত্যুর কিছুদিন আগে ঢাকার একজন প্রযোজক তাঁর সঙ্গে কথা বলে এসেছিলেন, তার ভিত্তিতে তৈরি হয়েছিল সেই সচিত্র প্রতিবেদন। কিন্তু স্মিতার আকস্মিক মৃত্যুতে সেই উদ্যোগ আর আলোর মুখ দেখেনি।

শ্যাম বেনেগালের আবিষ্কার

অভিনেত্রী স্মিতা ছিলেন শ্যাম বেনেগালের আবিষ্কার। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বরাবর সরব হয়েছেন নারীদের সমস্যা ও অধিকার নিয়ে। তাঁর ব্যক্তিত্বের প্রভাব পূর্ণ মাত্রায় পড়ত অভিনয়েও। তাঁর অভিনীত ছবিগুলো ছিল প্রথাগত নায়কপ্রধান ছবির বিপরীত মেরুর। মারাঠি ও হিন্দি ছবিতে নিজের সময়ে স্মিতা ছিলেন বলিষ্ঠ অভিনেত্রী। তাঁর প্রথম ছবি মুক্তি ‘মেরে সাথ চল’ মুক্তি পায় ১৯৭৪ সালে। এর পরের বছর শ্যাম বেনেগালের পরিচালনায় ‘নিশান্ত’। এরপর ‘চরণদাস চোর’, ‘মন্থন’, ‘ভূমিকায়’ স্মিতার অভিনয় এবং শ্যাম বেনেগালের পরিচালনার সেই অধ্যায় দীর্ঘ হয় অন্যান্য যশস্বী পরিচালকের নির্দেশনায়। স্মিতার নামের পাশে একে একে যোগ হয় ‘আক্রোশ’, ‘চক্র’, ‘সদগতি’, ‘অর্থ’, ‘দেবশিশু’, ‘চিদম্বরম’, ‘গুলামি’, ‘বাজার’, ‘আকালের সন্ধানে’, ‘মান্ডি’, ‘অর্ধসত্য’ ‘মির্চ মশালা’র মতো মাইলফলক ছবি। সমান্তরাল ছবির পাশাপাশি বাণিজ্যিক ছবিতেও স্মিতা ছিলেন সমান সাবলীল।

শ্যাম বেনেগালের চোখে

চলচ্চিত্রনির্মাতা শ্যাম বেনেগালের মতে, তিনি ছিলেন বহুমাত্রিক এক নারী। তিনি খুব সহজেই একটি গল্পের অংশ হয়ে যেতে পারতেন। সব দৃশ্যে অভিনয় করতেন খুব সাবলীলভাবে। অভিনয় ছিল স্মিতা পাতিলের সহজাত একটি বৈশিষ্ট্য। ক্যামেরার সঙ্গে তাঁর রসায়নও অনবদ্য। ক্যামেরা যেন তাঁকে সবার মাঝ থেকে বেছে নিতে পারত এবং এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল স্মিতার অভিনয়ের।

জাতীয় ও পদ্মশ্রী সম্মান

‘চক্র’ ছবির জন্য মুম্বাইয়ের বস্তিতে গিয়ে সেখানকার জীবনযাত্রা লক্ষ্য করতেন স্মিতা। এ ছবির জন্য তিনি দ্বিতীয়বার জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন ১৯৮০ সালে। প্রথম জাতীয় পুরস্কার ১৯৭৭-এ। ‘ভূমিকা’ ছবির জন্য। প্রথম জাতীয় পুরস্কারের অর্থ স্মিতা দান করেছিলেন সমাজসেবামূলক কাজে। ‘চক্র’ ছবির জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারও লাভ করেন। এ ছাড়া আরও সাতবার তিনি মনোনীত হয়েছিলেন ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের জন্য। ১৯৮৫ সালে ভূষিত হন ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে।

স্পষ্টভাষী ও নিঃসঙ্গ

অভিনয়ের মতো ব্যক্তিজীবনেও স্মিতা ছিলেন স্পষ্টচেতা। লুকিয়ে রাখেননি বিবাহিত রাজ বাব্বরের সঙ্গে সম্পর্ক। এ সম্পর্কের জন্য প্রতিভাময়ী অভিনেত্রী হয়ে উঠেছিলেন ইন্ডাস্ট্রির মুখরোচক আলোচনা। তাঁর বোন মান্য পাতিল পরে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, নিজের পরিসরে স্মিতা ছিলেন নিঃসঙ্গ। রাজ বাব্বরের সঙ্গে সম্পর্ক অস্বীকার করতে পারেননি। আবার রাজ-নাদিরার সংসার ভাঙার জন্য অপরাধবোধও কষ্ট পেতেন।

যেভাবে চিরবিদায়

ঘনিষ্ঠ মহলে শোনা যায়, স্মিতা মা হতে চেয়েছিলেন তাড়াতাড়ি। রাজ-স্মিতার একমাত্র সন্তান প্রতীকের জন্ম ১৯৮৬ সালের ২৮ নভেম্বর। এরপর জটিল হয়ে ওঠে স্মিতার শারীরিক অবস্থা। আর সুস্থ হতে পারেননি। দুই সপ্তাহের সদ্যোজাত পুত্রকে রেখে চলে যান স্মিতা ১৯৮৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর মাত্র ৩১ বছর বয়সে। স্মিতার অকাল মৃত্যুর পরে দুই বছর ধরে মুক্তি পেয়েছিল স্মিতা অভিনীত প্রায় এক ডজন ছবি।

শখ ছিল ফটোগ্রাফিতে

অভিনয়ের পাশাপাশি স্মিতার শখ ছিল ফাটোগ্রাফি। ভালোবাসতেন গাড়ি চালাতে, ভলিবল খেলতে। একই সঙ্গে ছিলেন ট্র্যাডিশনাল। তাঁর অকাল প্রয়াণের ক্ষতি পূরণ করা যায়নি, নির্দ্বিধায় স্বীকার করেছেন চলচ্চিত্র সমালোচকরা।

যেভাবে দর্শক তাঁর ভক্ত

মৃণাল সেনের কর্মশালায় অংশগ্রহণের সময় থেকেই ‘আকালের সন্ধানে’ দেখে তাঁর অভিনয়ের ভক্ত অনেকেই। সব ধরনের ছবিতেই অভিনয়ে তিনি ছিলেন অনবদ্য। স্মিতা পাতিলের জন্ম পুনেতে। সেখানে রেণুকা স্বরূপ মেমোরিয়ালে পড়াশোনা করেন তিনি। পুনেতে অবস্থিত ভারতের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। অভিনয়, স্টাইল, সামাজিক দায়বদ্ধতা স্মিতা পাতিলকে দ্রুত খ্যাতি এনে দেয়।

প্রচুর পড়াশোনা করতেন

পুনে ইনস্টিটিউটের সে সময়ের ছাত্র, প্রখ্যাত গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, পরিচালক প্রয়াত সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকি বলেছিলেন, প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনার বাইরে প্রচুর পড়তেন স্মিতা পাতিল। ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ছাত্র অরুণ খোপকারের ‘স্টোরি ফিল্ম’, ‘তীব্র মধ্যম’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন স্মিতা পাতিল। সে সময় প্রথমবর্ষের ছাত্র জাকি অনানুষ্ঠানিকভাবে এ ছবিতে সহকারী হিসেবে কাজ করেন।

স্মিতার নামে ডাকটিকিট

১৯৮৪ সালে কানাডার মন্ট্রিলে অনুষ্ঠিত বিশ্বে চলচ্চিত্র উৎসবে বিচারকমণ্ডলীর সদস্য হন স্মিতা পাতিল। ভারতের পদ্মশ্রী পদকপ্রাপ্ত এ শিল্পীর মুখাবয়ব দিয়ে ভারতীয় ডাক বিভাগ একটি ডাকটিকিট প্রকাশ করে। সমান্তরাল সিনেমার অন্যতম সেরা অভিনেত্রী ছিলেন স্মিতা পাতিল।

সব ঘরানার ছবিতে সফল

স্মিতা তাঁর অভিনয়শৈলীর প্রমাণস্বরূপ উপহার দিয়েছেন ‘ভূমিকা’, ‘অর্থ’, ‘আক্রোশ’, ‘মন্থন’ এবং ‘বাজার’, ‘আকালের সন্ধানে’, ‘চোখ’-এর মতো সিনেমা। সত্তর ও আশির দশকে বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের সঙ্গে সমান্তরাল ধারায় চলমান শিল্পশোভন চলচ্চিত্রের অত্যন্ত জনপ্রিয় দুটি মুখ ছিলেন স্মিতা পাতিল ও শাবানা আজমী। বহুবার এমনও হয়েছে যে নির্মাতারা স্মিতাকে মাথায় রেখে চরিত্র তৈরি করেছেন। শুধু দেহাবয়ব বা চাকচিক্যই নয়, শুদ্ধতম অভিনয়শিল্পের মধ্য দিয়ে উঠে আসা একটি নাম স্মিতা পাতিল। তিনি একাধারে অভিনয় করেছেন হিন্দি, তামিল ও মালয়ালাম চলচ্চিত্রে। বড় পর্দার মতো ছোট পর্দায়ও একসময় তিনি রাজত্ব করেছেন। তাঁর ক্যারিয়ার এক দশকের বেশি বিস্তৃত হতে পারেনি। কিন্তু এ স্বল্প পরিসরেই তিনি অভিনয় করেন ৮০টিরও বেশি হিন্দি ও মারাঠি সিনেমায়। অভিনয়ের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা সত্যিই উল্লেখযোগ্য। চরিত্রের দাবিতে তিনি নিজেকে প্রস্তুত করে নিতেন। কোনো সীমায় নিজের অভিনয়শিল্পকে বাঁধতে তিনি রাজি ছিলেন না। অভিনয়ের ব্যাপারে তার মধ্যে কোনো সংস্কার কাজ করত না। কোনো চরিত্র পছন্দ হলে নিজের সবটুকু দিয়েও সেটিকে ফুটিয়ে তুলতে বদ্ধপরিকর ছিলেন স্মিতা পাতিল। ‘চক্র’ সিনেমায় অভিনয়ের সময় তিনি প্রায়ই মুম্বাইয়ের বস্তিগুলোতে যেতেন চরিত্রকে আরও ভালো ফুটিয়ে তোলার জন্য।

শাবানা আজমীর চোখে

অভিনেত্রী শাবানা আজমী স্মিতার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, প্রথম যেদিন তাঁকে দেখেন, তাঁর মনে হয়েছিল যে, ওই মুখ ক্যামেরার জন্যই তৈরি। এ ছাড়া ‘নিশান্ত’ সিনেমায় তাঁরা দুজন প্রথম একসঙ্গে অভিনয় করেন, পরস্পরবিরোধী কিন্তু একই সুতোয় গাঁথা দুটি চরিত্র। এর বাইরে ‘অর্থ’, ‘মন্ডি’, ‘উঁচ নিচ বিচ’ ইত্যাদি সিনেমায় তাঁরা একসঙ্গে কাজ করেন।

(বাংলাদেশ প্রতিদিন)

আপনার সামাজিক মিডিয়াতে এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2023-2024 culturenews24.com    E-mail: newsroom@culturenews24.com, culturenews24.com@gmail.com
Theme Customized By BreakingNews